বিভাজ্যতার দশ নিয়মাবলী

অনেক বড় বড় সংখ্যাগুলো আরেকটি সংখ্যা দিয়ে ভাগ যাবে কিনা তা সহজে বের করার কিছু নিয়ম আছে যার সাহায্য খুব সহজেই বলা যায় একটি সংখ্যা বিভাজ্য কি না।

১। ২ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ যদি কোন সংখ্যার শেষ বা একক অঙ্ক শূণ্য বা জোড় সংখ্যা হয় তবে সংখ্যাটি ২ দ্বারা বিভাজ্য হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৫৬৪৭২ এই সংখ্যাটির এককের ঘরে যে অঙ্কটি আছে সেটা হল ২ যা জোড় অঙ্ক তাই সংখ্যাটি ২ দ্বারা বিভাজ্য হবে। একেইভাবে, ৫৪৬৮৮, ১২৯৮৩৭৩৬৩৫০ সংখ্যাগুলোও ২ দ্বারা বিভাজ্য হবে কারণ এসব সংখ্যার এককের ঘরের অংক হয় শূণ্য নয়ত জোড় অঙ্ক।

২। ৩ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ কোন সংখ্যার অঙ্কগুলির যােগফল ৩ দিয়ে বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন ৩৬৯ এই সংখ্যায় ৩ টি অঙ্ক ৩, ৬ ও ৯ রয়েছে। অংকগুলোর যােগফল = ৩+৬+৯=১৮ যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য। সুতরাং, ৩৬৯ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হবে। ধরা যাক, ৫৪২ আরেকটি সংখ্যা এইখানেও ৩ টি অঙ্ক রয়েছে ৫, ৪ ও ২। এদের যোগফল=৫+৪+২=১১ যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য নয়, সুতরাং ৫৪২ সংখ্যাটিও ৩ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে না।

৩। ৪ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ একটি সংখ্যার শেষ ২ টি অঙ্ক যদি শূন্য হয় বা অংক দুইটি দিয়ে গঠিত সংখ্যাটি যদি ৪ দিয়ে ভাগ যায় তবে পুরো সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

৪। ৫ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ কোন সংখ্যার এককের ঘরের অংক যদি ০ বা ৫ হয় তবে পুরো সংখ্যাটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

৫। ৬ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ যদি সংখ্যাটি ২ ও ৩ দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে তা ৬ দ্বারাও নিঃশেষে বিভাজ্য হবে।

৬। ৭ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ একটি সংখ্যার বাম দিক থেকে তিনটি করে অঙ্ক নিয়ে গঠিত অঙ্কগুলির জোড় স্থান ও বিজোড় স্থানের যােগফলের বিয়ােগফল ০ অথবা ৭ দ্বারা বিভাজ্য হলে  সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন, ৪২০৬৪০২২০ এই সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য। এই সংখ্যাটিকে ৩টি করে অংক নিয়ে আলাদা করলে আমরা পাই, ৪২০ ৬৪০ ২২০। এখানে, ৩টি সংখ্যা পেলাম আমরা ১ম ও ৩য় স্থানে(বিজোড় স্থানে) রয়েছে ৪২০ ও ২২০ এবং জোড়স্থানে রয়েছে ৬৪০। এখন নিয়মঅনুযায়ী বিজোড়স্থানের সংখ্যাগুলো যোগ করি। ৪২০+২২০=৬৪০ এবং যোগফল থেকে জোড়স্থানের অংকটি বিয়োগ করি ৬৪০-৬৪০=০। যেহেতু শূন্য পেয়েছি তাই পুরো সংখ্যাটি ৭ দিয়ে বিভাজ্য হবে। 

আরেকটি সংখ্যা নেওয়া যাক, ৪২১৮৩৮৯০। এবার ৩টি করে অংক নিয়ে আলাদা করি। ০৪২ ১৮৩ ৮৯০। ১ম ও ৩য় অর্থাৎ বিজোড় স্থানে আছে ০৪২ ও ৮৯০, এদের যোগফল হল- ০৪২+৮৯০= ৯৩২। জোড়স্থানের সংখ্যাটি হল ১৮৩। যোগফল থেকে জোড়স্থানের সংখ্যাটি বিয়োগ করলে দাঁড়ায় ৯৩২-১৮৩= ৭৪৯ যা ৭ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং ৪২১৮৩৮৯০ সংখ্যাটিও ৭ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

৭। ৮ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ যদি একটি সংখ্যার শেষ ৩টি অংক শূন্য হয় বা শেষ ৩টি অংক ৮ দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন ১২৮৯০০০ এই সংখ্যাটি ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে কারণ এর শেষ ৩ ঘরের অংক হল ০। আবার, ১২৩৪৫৬৮৬৪ এই সংখ্যাটিও ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে কারণ সংখ্যাটির শেষ ৩টি অঙ্ক ৮৬৪, ৮ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হয়।

৮। ৯ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ এই নিয়মটি ৩ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মাবলীর অনুরুপ, অর্থাৎ, কোন সংখ্যার অংকগুলোর যোগফল যদি ৯ দিয়ে বিভাজ্য হয় তাহলে সংখ্যাটি ও ৯ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে। যেমন-৬৬২৬৯৮৮ সংখ্যাটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য কারণ ৬+৬+২+৬+৯+৮+৮=৪৫ যা ৯ দ্বারা বিভাজ্য।

৯। ১০ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ কোন সংখ্যার এককের ঘরের অংক যদি শূন্য হয় তাহলে সংখ্যাটি ১০ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

১০। ১১ দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মঃ বামদিক থেকে একটি সংখ্যার জোড়স্থানের অংকগুলোর যোগফল থেকে যদি বিজোড়স্থানের অংকগুলোর যোগফল বিয়োগ করা হয় তাহলে প্রাপ্ত বিয়োগফল যদি ০ হয় কিংবা ১১ দিয়ে বিভাজ্য হয় পুরো সংখ্যাটি ১১ দিয়ে বিভাজ্য হবে। যেমন, ৩১২৭৬৩ সংখ্যাটিতে জোড়স্থানের অংকগুলো হল (বামদিক থেকে) ৬, ২ ও ৩ এবং বিজোড়স্থানের অংকগুলো হল ৩, ৭ ও ১। সুতরাং, (৬+২+৩) – (৩+৭+১) = ০ অর্থাৎ সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য। আবার, ৯১১০২০ এখানে নিয়মানুযায়ী যোগ ও বিয়োগ করলে পাই, (২+১+৯) – (০+০+১) = ১১ যা ১১ দিয়ে বিভাজ্য। সুতরাং ৯১১০২০ সংখ্যাটিও ১১ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

Share

2 thoughts on “বিভাজ্যতার দশ নিয়মাবলী

  1. Thanks for every other wonderful post. The place else may just anyone get that kind of information in such a perfect means of writing? I’ve a presentation subsequent week, and I am on the look for such information.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Proudly powered by WordPress | Theme: Lean Blog by Crimson Themes.